চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ব্যাট হাতে দুই ম্যাচেই ব্যর্থতার পর চারিদিক থেকে সমালোচনার তীর ধেয়ে যাচ্ছিল মুশফিকের দিকে। এসব আলোচনার মাঝেই দেশে ফিরে কঠিন সিদ্ধান্তটি জানিয়েছেন তিনি।
সামাজিক মাধ্যমে গত বুধবার রাতে বিদায়ের ঘোষণা জানান ৩৭ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান।
“আজকে থেকে ওয়ানডে সংস্করণ থেকে অবসরের ঘোষণা দিচ্ছি আমি।”
“সবকিছুর জন্য আলহামদুলিল্লাহ। বৈশ্বিক পর্যায়ে আমাদের অর্জন হয়তো সীমিত, তবে একটি ব্যাপার ছিল নিশ্চিত, প্রতিবার দেশের জন্য যখন মাঠে নেমেছি, নিবেদন ও সততার সঙ্গে নিজের শতভাগের বেশি দিয়েছি।”
অনেক সাফল্যের নায়ক মুশফিক টি-টোয়েন্টির মতো ওয়ানডে থেকেও তাই মাঠ থেকে বিদায় নেওয়া হলো না তার। নয়তো জাতীয় দলের সতীর্থদের কাছ থেকেই হয়তো বিদায়ী ‘গার্ড অব অনার’ পেতে পারতেন মুশফিক। সেটি না হলেও অবসর নেওয়ার পর দিনই মুশফিককে সম্মান জানালেন মোহামেডানের সতীর্থরা।
এই তালিকায়ও অবশ্য ছিলেন মুশফিকের জাতীয় দলের সতীর্থদের অনেকে। অধিনায়ক তামিম ছাড়াও মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, নাসুম আহমেদ, তাওহিদ হৃদয়, ইবাদত হোসেন চৌধুরি, তাওহিদ হৃদয়, রনি তালুকদার, আবু হায়দারদের কাছ থেকে ‘গার্ড অব অনার’ পান অভিজ্ঞ কিপার-ব্যাটসম্যান।
পরে মাঠে নেমে পুরো পঞ্চাশ ওভার কিপিং করেন মুশফিক। বরাবরের মতোই মাঠে তিনি ছিলেন দারুণ সক্রিয়। শুরু থেকেই নানা পরামর্শ দিতে থাকেন বোলারদের। মাঠ সাজানোতেও সাহায্য করেন তামিমকে।
রূপগঞ্জ টাইগার্সের চতুর্থ উইকেট পড়ার পর স্টাম্প মাইকে কোনো এক সতীর্থের সঙ্গে খুনসুঁটি করতেও শোনা যায় তাকে। মজার ছলে আরও কিছু রান করতে দিয়ে তিনি বলেন, ‘রান করতে দে, নাহলে পরে কিন্তু ব্যাটিংয়ের সুযোগ পাবি না।’
হাসি-মজার মাঝেও নিজের কাজটা ঠিকঠাকই করেন মুশফিক। দুইটি স্টাম্পিংয়ের পাশাপাশি একটি ক্যাচ নিয়ে প্রথম ইনিংস শেষ করেন তিনি।
আন্তর্জাতিক ওয়ানডেতে তিনটি ডিসমিসাল হলেই তিনশ পূর্ণ হয়ে যেত তার। সেই পথ বন্ধ হয়ে গেলেও পরদিন মাঠে নেমে ‘লিস্ট এ’ ক্রিকেটে তিনটিই ডিসমিসাল পেলেন অভিজ্ঞ কিপার।
২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে বিদায় নিয়েছিলেন তিনি এভাবেই সামাজিক মাধ্যমে জানিয়ে। ওয়ানডে থেকে তার বিদায়ে শেষ হলো বাংলাদেশ ক্রিকেটের একটি অধ্যায়ের। সেখানে গৌরব, অর্জন, প্রাপ্তি যেমন আছে, তেমনি আছে কিছু ব্যর্থতা আর হতাশার ছোঁয়াও।
এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে প্রথম ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে প্রথম বলেই আউট হন মুশফিক। পরের ম্যাচে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে বিদায় নেন ২ রানে। সেই ম্যাচে তার আউট হওয়ার ধরন প্রবল প্রতিক্রিয়ার জন্ম দেয় দেশের ক্রিকেটে। প্রথম দুই ম্যাচ হেরে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যায় বাংলাদেশ।